বিশেষণ পদ লেখার নিয়ম
বিশেষণ পদ বাংলা ব্যাকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি এমন একটি শব্দ বা পদ, যা মূলত কোনো বিশেষ্যের গুণ, দোষ, অবস্থা বা পরিমাণ প্রকাশ করে। নিচে বিশেষণ পদ লেখার নিয়মগুলো উল্লেখ করা হলো :
১. বিশেষণের সংজ্ঞা ও চিহ্নিতকরণ :
বিশেষণ সেই পদ, যা বিশেষ্যের গুণ, দোষ, পরিমাণ বা অবস্থা নির্দেশ করে।
উদাহরণ :
- “সুন্দর ফুল” – এখানে “সুন্দর” হলো বিশেষণ, যা “ফুল” বিশেষ্যের গুণ প্রকাশ করছে।
- “বড়ো বাড়ি” – “বড়ো” বিশেষণ, যা “বাড়ি”র আকার বোঝাচ্ছে।
২. বিশেষণের ধরন অনুযায়ী ব্যবহার :
বিশেষণকে মূলত চার ভাগে ভাগ করা হয় :
- গুণবাচক বিশেষণ: বিশেষ্যের গুণ প্রকাশ করে।
উদাহরণ: সুন্দর, নরম, শক্ত, মিষ্টি।- রচনা: “সে একটি মিষ্টি আম খেল।”
- পরিমাণবাচক বিশেষণ: কোনো বিশেষ্যের পরিমাণ বোঝায়।
উদাহরণ: অনেক, কিছু, বেশি।- রচনা: “আমার কাছে কিছু টাকা আছে।”
- সংখ্যাবাচক বিশেষণ: সংখ্যা নির্দেশ করে।
উদাহরণ: এক, দুই, দশ, হাজার।- রচনা: “আমি পাঁচটি বই কিনেছি।”
- সর্বনামবাচক বিশেষণ: সর্বনামের গুণ প্রকাশ করে।
উদাহরণ: তার, আমার, তোমার।- রচনা: “তার বাড়ি সুন্দর।”
৩. বিশেষণ ব্যবহার করার নিয়ম :
- বিশেষ্যের আগে বা পরে বসানো :
সাধারণত বিশেষণ বিশেষ্যের আগে বসে।
উদাহরণ:- “বড়ো গাছ” (বিশেষণ: বড়ো, বিশেষ্য: গাছ)। তবে কখনো কখনো বিশেষণের পরে বিশেষ্যও বসে।
উদাহরণ: - “গাছটি বড়ো।”
- “বড়ো গাছ” (বিশেষণ: বড়ো, বিশেষ্য: গাছ)। তবে কখনো কখনো বিশেষণের পরে বিশেষ্যও বসে।
- সঠিক রূপ নির্বাচন :
বিশেষণ ব্যবহারের সময় বাক্যের সঙ্গে সংগতি রেখে শব্দের রূপ পরিবর্তন করতে হবে।
উদাহরণ:- “ছোটো বাচ্চা” (একবচন) এবং “ছোটো ছোটো বাচ্চারা” (বহুবচন)।
৪. প্রয়োগের ধরন :
- সাধারণ বাক্যে :
উদাহরণ: “সবুজ ঘাস মাঠ ঢেকে রেখেছে।”- “সবুজ” (গুণবাচক বিশেষণ)।
- উপমা বা তুলনায় :
উদাহরণ: “তোমার কাজটি বেশি ভালো।”- “বেশি” (পরিমাণবাচক বিশেষণ)।
৫. বিশেষণ বাক্যে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে :
বিশেষণ বাক্যে বিস্তারিত বর্ণনা ও দৃশ্যমানতা বাড়ায়।
উদাহরণ:
“নীল আকাশের নিচে সবুজ মাঠ।”
এখানে “নীল” এবং “সবুজ” বিশেষণ হিসেবে বাক্যকে আরও চিত্রময় করেছে।
এগুলো মাথায় রেখে বিশেষণ পদ সঠিকভাবে লেখা এবং প্রয়োগ করা যায়।
বিশেষণ পদ সাধারণত সংশ্লিষ্ট পদ থেকে নিজেকে ফাঁক রেখে বসে। যেমন : নীল আকাশ, সাদা ফুল। তবে বিশেষ্যের সঙ্গে যে বিশেষন বসানো হয় তার কোনো বিশেষণ থাকলে পদদ্বয় একত্রে বসে। যেমন : বিশ্বসুন্দরী, রক্তলাল, দুদ্ধধবল ইত্যাদি।